হাদিসে নবীজির (সা.) তিনটি ফল খাওয়া ও পছন্দ করার বর্ণনা পাওয়া যায়। নবীজি (সা.) নিজেকে নির্দিষ্ট একটি খাবারেও সীমাবদ্ধ রাখতেন না। নবীজির (সা.) খাদ্যাভ্যাস ছিল এমন যে, তিনি সামনে যা পেতেন তা ফিরিয়ে দিতেন না।
বরং শরীর-স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নানা রকমের খাবার খেতেন। যদি কোনো খাবারে এমন গুণ থাকত যা ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে, তিনি তা অন্য কিছু দিয়ে সামঞ্জস্য করতেন যেমন খেজুরের মধ্যে শরীর গরম করে ফেলার গুণ আছে, অন্যদিকে বিত্তিখ (এক ধরনের ফল) আবার পেট ঠাণ্ডা করে। তাই তিনি এই দুটো মিলিয়ে খেতেন।
যদি সামঞ্জস্যের উপকরণ না মিলত, তিনি অল্প পরিমাণে খেতেন যেন শরীর তা সইতে পারে, অপচয় বা অপকার না হয়।
১. খেজুর
আরবে সবচেয়ে বেশি উৎপন্ন হয় খেজুর। স্বাভাবিকভাবেই এই খেজুর নবীজির (সা.) দস্তরখানে থাকত। তিনি খেজুর বিশেষভাবে পছন্দও করতেন। একবার আম্মাজান আয়েশাকে (রা.) তিনি বলেছিলেন হে আয়েশা, যে ঘরে খেজুর নেই, সে ঘরে কোনো খাবার নেই। (সহিহ মুসলিম: ২০৪৬)
নবীজি (সা.) রুটির সঙ্গেও খেজুর খেতেন। ইউসুফ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) যবের রুটির সঙ্গে একটি খেজুর রেখে বলেছিলেন এই খেজুর এই রুটির তরকারি।
প্রচুর দান-সদকা করার কারণে নবীজির (সা.) ঘরে অভাব লেগেই থাকত। অনেক সময় দীর্ঘ দিন নবীজির (সা.) একমাত্র খাবার হতো খেজুর ও পানি। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা, মুহাম্মাদের (সা.) পরিবার এমন সময়ও কাটাতাম যখন এক মাস ধরে আমাদের ঘরে আগুন জ্বালতো না খাবার হিসেবে থাকত শুধু খেজুর আর পানি।
২. বিত্তিখ
আরবে এক ধরনের ফল আছে যার ভেতরটা বাঙ্গির মতো কিন্তু খোসা কিছুটা আলাদা। ইংরেজিতে একে বলে Melon। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, নবীজি (সা.) পাকা খেজুরের সঙ্গে মিলিয়ে বিত্তিখ খেতেন আর বলতেন—এর গরমকে এটা ঠাণ্ডা করে, আর এর ঠাণ্ডাকে ওটা গরম করে ভারসাম্য আনে।
৩. কিশমিশ বা শুকনো আঙ্গুর
নবীজি (সা.) পানিতে ভিজিয়ে কিশমিশ খেতেন। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, আমরা নবীজির (সা.) জন্য চামড়ার পাত্রে পানীয় তৈরি করতাম। সেই পাত্রে এক মুঠো খেজুর বা এক মুঠো কিশমিশ দিতাম, তারপর তার ওপর পানি ঢেলে রাখতাম। সকালে এভাবে রেখে দিলে তিনি তা সন্ধ্যায় পান করতেন, আর সন্ধ্যায় রেখে দিলে সকালে পান করতেন।